বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই. কান সম্পর্কে কিছু জানাতে
লুই ইসাডোর কান (লুই আই. কান) বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী স্থাপত্যবিদদের মধ্যে একজন ছিলেন।
তাঁর প্রাথমিক জীবন অতটা মসৃণ ছিল না। তাঁর পরিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসার আগে, রাশিয়ান সাম্রাজ্যে (এখন এস্তোনিয়া) একটি দরিদ্র ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম হয়েছিল। কান তরুণ বয়স থেকেই শিল্পে চমৎকার ছিলেন, কিন্তু তিনি একজন অখ্যাত ছাত্র ছিলেন, যতক্ষণ না তিনি স্থাপত্যের একটি কোর্স গ্রহণ করেন।
১৯২৪ সালে তাঁর স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করার পর, তিনি ফিলাডেলফিয়ার বিভিন্ন সংস্থাগুলিতে কাজ করেন। ১৯৩৫ সালে তিনি নিজের শিল্পশালা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর ব্যক্তিগত অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ইয়েল স্কুল অব আর্কিটেকচারের ডিজাইন সমালোচক এবং অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সাল থেকে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যের অধ্যাপক ছিলেন।
তিনি পঞ্চাশ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর স্বাতন্ত্র্যসূচক স্থাপত্য শৈলীতে পৌঁছননি। তারপর থেকে তাঁকে আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে —
- ইয়েল ইউনিভার্সিটি আর্ট গ্যালারি, কানেক্টিকাট (1951–1953)
- রিচার্ডস মেডিকেল রিসার্চ ল্যাবরেটরিস, ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়া, ফিলাডেলফিয়া, পেনসিলভানিয়া (1957–1965)
- সাল্ক ইনস্টিটিউট, লা জল্লা, ক্যালিফর্নিয়া (1959–1965)
- ফার্স্ট উনিটারিয়ান চার্চ, রোচেস্টার, নিউ ইয়র্ক (1959–1969)
- ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, আহমেদাবাদ, ভারত (1961)
- কিম্বেল আর্ট মিউজিয়াম, টেক্সাস (1967-1972)
- ফিলিপ্স এক্সেটর একাডেমী লাইব্রেরি, নিউ হ্যাম্পশায়ার (1965–1972)
- আর্টস ইউনাইটেড সেন্টার, ইন্ডিয়ানা (1973)
ইত্যাদি।
এছাড়া, বাংলাদেশে ওনার কয়েকটি স্থাপত্য রয়েছে:
- শহীদ সুহরাবর্দি মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, ঢাকা
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিসিসেস, ঢাকা
- ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বিল্ডিং, তাঁর ছাত্র মুজহারুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর চূড়ান্ত ও উল্লেখযোগ্য কাজ।
এবার আসি তাঁর ম্যাগনাম ওপাস "জাতীয় সংসদ ভবন" প্রসঙ্গে।
তিনি সমগ্র জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্স গঠন করেন, যার মধ্যে লন, হ্রদ এবং সংসদ সদস্যদের জন্য বাসস্থানও রয়েছে। তাঁর মূল নকশা দর্শনটি ছিল বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে প্রতিনিধিত্ব করা, একই সাথে সঠিকভাবে স্থানের ব্যবহার করা।
এটি ২০০ একর জমি নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম বিধানসভা বিল্ডিংগুলোর মধ্যে একটি, যা বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপত্যের মধ্যে একটি।
১৯৮৯ সালে এটি "আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার" লাভ করে।
তিনি এআইএ স্বর্ণপদক এবং রিবা স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। তাঁর মৃত্যুর সময় তিনি "আমেরিকার সর্বাগ্রে বসবাসকারী স্থপতি" হিসাবে বিবেচিত হয়েছিলেন
If you have any doubt , let me know.