{ads}

সয়েল টেস্ট করার নিয়ম (পর্ব -২):

সয়েল টেস্ট করার নিয়ম (পর্ব -২):


ভবন নির্মাণে সয়েল টেস্ট (মাটি পরীক্ষা) বাধ্যতামূলক হলেও এর জন্য নেই কোনো নীতিমালা। ফলে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে এ ধরনের পরীক্ষাকে পাশ কাটিয়েই। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো মাটি পরীক্ষা করা হলেও তা নির্ভর করছে টিউবয়েল স্থাপনকারীদের ওপর। যাদের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। আর এসব অনুমান নির্ভর নমুনা অনেকাংশে ভবন ধসের মতো দুর্ঘটনার মূল কারণ। 


#সাইটে মাটি পরীক্ষার (সয়েল টেস্টের) পদ্ধতিসমূহঃ


১. সাইট বা প্লট পরিদর্শন ও জরিপ করা।

২. ফিল্ডের অবস্থা অনুযায়ী বোরিং সংখ্যা ও স্থান  নির্বাচন করা এবং সেই অনুযায়ী বোরিং কাজ সম্পন্ন করা।

৩. প্রয়োজন অনুযায়ী বোরিং গভীরতা নির্ধারণ করা।

৪. প্রত্যেক বোরিং স্থানে মাটির অক্ষত এবং বিক্ষত নমুনা সংগ্রহ করা এবং ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা।

৫. বোরিং বা ড্রিলিং-এর সাহায্যে ৫ ফুট অন্তর মাটির এস.পি.টি (S.P.T) ভ্যালু নির্ণয় করা এবং মাটির নিরাপদ ভারবহন ক্ষমতা (সেফ বিয়ারিং ক্যাপাসিটি) বের করা।

৬. ফিল্ড টেস্ট এবং ল্যাব টেস্টেও ফলাফল বের করা।

৭. অবশেষে মাটি পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরী করা এবং সেই অনুযায়ী বাড়ির ফাউন্ডেশন সম্পর্কে মন্তব্য করা।


#বোরিং স্থান নির্ধারণ (বোরিং সংখ্যা ও দূরত্ব অনুযায়ী):


(প্রথম ছবিটি দেখুন)


বি:দ্র: সাধারণ নিয়মঅনুযায়ী প্রতি তলা বিল্ডিং-এর জন্য ৩ মিটার বোরিং করতে হবে।


#বিল্ডিং-এর প্রস্থ বা পার্শ্ব দিক অনুযায়ী বোরিং গভীরতা নিম্নরূপঃ


(দ্বিতীয় ছবিটি দেখুন)


#মাটি পরীক্ষার টেস্ট সাধারণত দুই প্রকারঃ


১. মাটির ফিল্ড টেস্ট


ক. প্লেট লোড বেয়ারিং টেস্টঃ ইহা সাধারণ যন্ত্র পরিচালিত পদ্ধতি যা দ্বারা মাটির যে কোন স্তরে চূড়ান্ত  বেয়ারিং ক্যাপাসিটি এবং মাটির সংকোচন মাপা যায় বা নির্ণয় করা যায়। অধিকিন্তু এই টেস্ট দ্বারা নির্ণীত ফলাফল তুলনা এবং সত্যতা যাচাই করা যায়।


খ. এস.পি.টি (S.P.T ) টেস্টঃ এস.পি.টি ( S.P.T = Standard Penetration Test) – এর মাধ্যমে মাটির এন (ঘ) ভ্যালু Value () যেমন নির্ণয় করা যায় তেমনি সংগৃহীত মাটির নমুনা Soil (Sample)


ল্যাবরেটরীতে টেস্ট করা হয়। ফিল্ডে প্রতিটি বোরিং ৫ ফুট পর পর এন (ঘ) ভ্যালু Value() নির্ণয় করা হয়, যাহা মাটির ভারবহন ক্ষমতা সরাসরি দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে।


#Standard Penetration Test পদ্ধতিঃ এ পরীক্ষার জন্য পেনিট্রোমিটার নামক স্পিলিট ব্যারেল নমুনা সংগ্রাহক ব্যবহার করা হয়। একটি 50 mm বাহিরের এবং 35 mm

ভিতরের ব্যাস বিশিষ্ট ফাঁপা স্টীল পাইপকে স্পিলিট ব্যারেল বা স্পিলিট স্পুন নমুনা সংগ্রাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর দৈর্ঘ্য 60 cm এর কম নয়।

প্রথমে মাটিতে 55 mm থেকে 150 mm ব্যাস বিশিষ্ট একটি গর্ত করা হয় এবং ড্রিল রডের সাথে স্পিলিট ব্যারেল নমুনা সংগ্রাহকটি যুক্ত করে গর্তের নিচের প্রান্তে স্থাপন করা

হয়। তারপর 65 kg ওজনের হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে নমুনা সংগ্রাহকটিকে মাটির অভ্যন্তরে কমপক্ষে 60 cm প্রবেশ করানো হয়। হাতুড়িকে 75 cm উপর হতে মিনিটে 30

বার হয়। প্রথম 15 cm প্রবেশ করাতে আঘাতের সংখ্যা হিসাব করা হয় না। বাকি 30 cm প্রবেশ করাতে আঘাতের সংখ্যা হিসাব করা হয়। এ 30 cm প্রবেশ করাতে আঘাতের

সংখ্যাকে পেনিট্রেশন রেজিস্ট্যান্স (Penetration Resistance) বলে। একে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়।


#SPT value এর Correction করার কারণঃ সূক্ষ্ম বালি বা পলিযুক্ত বালি মাটি পানি তলের নিচে অবস্থিত হলে Penetration Resistance বেশি পাওয়া যায়। টারজাগী এবং

পেক বলেছেন, যদি Penetration Resistance এর মান 15 এর বেশি হয় তবে নিম্নের সূত্রের সাহায্যে একটি সমতুল্য পেনিট্রেশন রেজিস্ট্যান্স এর মান নির্ণয় করা হয়।

সমতুল্য পেনিট্রেশন রেজিস্ট্যান্স, Ne = 15+½(N-15)

বি :দ্র : এস.পি.টি  (S.P.T ) ভ্যালুর সাহায্যে ফিল্ডে সরাসরি মাটির ভারবহন ক্ষমতা (বেয়ারিং ক্যাপাসিটি) নির্ণয় এবং পরীক্ষা করা যায়।


২. মাটির ল্যাব টেস্টঃ

ASTM – অনুযায়ী মাটির ল্যাব টেস্টসমূহ সাধারণত নিম্নরুপঃ

ক) ময়েশ্চার কনটেন্ট টেস্ট

খ) প্লাস্টিসিটি টেস্ট

গ) আপেক্ষিক গুরুত্ব টেস্ট

ঘ) ঘনত্ব টেস্ট

ঙ) কনসোলিডেশন টেস্ট

চ) ডাইরেক্ট শেয়ার টেস্ট, ইত্যাদি।


বি:দ্র: উপরোক্ত টেস্টের ফলাফলের মাধ্যমে মাটি পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরী এবং মন্তব্য করা হয়।


Source: Homebuildersclub.org


আশা করি আপনারা সয়েল ও সয়েল টেস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন ♥


আমাদের সাথেই থাকুন...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.