মিশরের ফারাওরা যখন গিজার তিনটা পিরামিড নির্মান করেন তখন সেগুলোর উচ্চতা ছিলা ৪৮৭ ফিট বা একটা ৪৮ তলা বিল্ডিং এর সমান উচু। যা এই স্থাপনাগুলোকে তৎকালিন সময়ের সবচেয়ে উচু স্ট্রাকচারে পরিনত করে। এগুলো প্রায় ৪০০০ বছর ধরেই পৃথিবীর সবচেয়ে উচু ভবন ছিল। মানে হচ্ছে এই চার হাজার বছরে মানুষের নির্মিত কোন স্থাপনাই পিরামিডকে টপকাতে পারে নাই।
১৩০০ সালে যখন ইংল্যান্ডে Lincoln Cathedral নামক চার্চ নির্মিত হয় তখনই কেবল পিরামিডকে মানুষ তার নির্মিত ভবনের উচ্চতা দিয়ে টপকাতে পারে। এটির উচ্চতা ছিল ৫২৫ ফিট। তাহলে চমৎকার একটা প্রশ্ন হচ্ছে "গিজার পিরামিড কি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিল্ডিং" । কারন হাজার পাচেক বছর আগে বানানো এই জিনিষ এখনো দারিয়ে আছে। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আগে আমাদের বুঝতে হবে বিল্ডিং কি জিনিষ।
তাত্বিক ভাবে বিল্ডিং হচ্ছে এমন একটা স্ট্রাকচার যেটার উচ্চতার কমপক্ষে ৫০ ভাগ আসবে তার ফ্লোর থেকে। যেখানে মানুষ বসবাস করতে পারবে, কাজ করতে পারবে এবং বিনোদন সহ সবকিছুর জন্য ব্যাবহার করতে পারবে। মোদ্দাকথা হচ্ছে কোন স্ট্রাকচারকে বিল্ডিং বা ভবন হতে হলে সেটাতে মানুষের থাকার এবং কাজের সুবিধা থাকতে হবে। এই শর্তযদি যদি কোন স্ট্রাকচার পুরন করতে না পারে তবে সেটা বিল্ডিং বা ভবন হিসাবে গন্য হবে না। সেটা একটা টাওয়ার হিসাবে গন্য হবে। সেক্ষেত্রে পিরামিড ভবন নয়।
তাত্বিক ভাবে বিল্ডিং হচ্ছে এমন একটা স্ট্রাকচার যেটার উচ্চতার কমপক্ষে ৫০ ভাগ আসবে তার ফ্লোর থেকে। যেখানে মানুষ বসবাস করতে পারবে, কাজ করতে পারবে এবং বিনোদন সহ সবকিছুর জন্য ব্যাবহার করতে পারবে। মোদ্দাকথা হচ্ছে কোন স্ট্রাকচারকে বিল্ডিং বা ভবন হতে হলে সেটাতে মানুষের থাকার এবং কাজের সুবিধা থাকতে হবে। এই শর্তযদি যদি কোন স্ট্রাকচার পুরন করতে না পারে তবে সেটা বিল্ডিং বা ভবন হিসাবে গন্য হবে না। সেটা একটা টাওয়ার হিসাবে গন্য হবে। সেক্ষেত্রে পিরামিড ভবন নয়।
আবার ইতিহাসে ফিরে যাই। Lincoln Cathedral এর পরে আরো কিছু শতাব্দি অনেক গুলো চার্চ বা খ্রিস্টানদের প্রার্থনার স্থান ভবন নির্মানের ক্ষেত্রে টানা একটার পরে একটা রেকর্ড করতে থাকে আর ভাঙতে থাকে। ১৮৮০ সালে এই চার্চগুলো নির্মিত হয়। তার মানে প্রায় ৪৮০০ বছর ধরে উপরের দুইটা স্ট্রাকচার টানা উচ্চতার রেকর্ড ধারন করে ছিল।
এর পরে ১৮৮৯ সালে আইফেল টাওয়ার(৯৮৬ ফিট) নির্মিত হওয়ার পরে সেটিই ছিল সবচেয়ে লম্বা সময় ধরে সর্বোচ্চ উচ্চতায় থাকার তৃতিয় স্ট্রাকচার। এটি পৃথিবীতে প্রায় ৪২ বছর ধরে টানা সর্বোচ্চ উচ্চতার স্ট্রাকচার হিসাবে গন্য ছিল। এর পরে আমেরিকার নিউয়র্কের Chrysler Building (১৪৬ ফিট) ১৯৩০ সালে আবার নতুন রেকর্ড করে। ঠিক তার পরের বছর নিউয়র্কের বিখ্যাত Empire State Building আগের রেকর্ড ভেঙ্গে আবার নতুন রেকর্ড গরে।
Empire State Building হচ্ছে মানুষ্য নির্মিত প্রথম স্ট্রাকচার যেটি এতটাই উচু যে এটা থেকে মানুষ লাফ দিলে তার টারমিনাল ভেলোসিটিতে (terminal velocity) পৌছবে।(টারমিনাল ভেলোসিটি হচ্ছে যেকোন বস্তুর পরন্ত গতিবেগ। মানে হচ্ছে কোন বস্তুকে যদি উপরে থেকে বাতাসে ছেরে দেয়া হয় তবে সেটি মাটিতে পরতে পরতে সর্বোচ্চ যেই স্পিডে পৌছবে সেটি। মানে এই ভবনটি থেকে যদি কোন মানুষ আত্মহত্যা বা যে কোন কারনে লাফ দেয় তবে তার পরন্ত গতিবেগ বাড়তে বাড়তে একসময় সেটা মোটামুটি প্রায় ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় পৌছবে। এবং এই গতিবেগ আসতে যে সময় লাগে সেই সময়টুকুন পাওয়া যাবে এই Empire State Building থেকে লাফ দিলে। এজন্যই আত্মহত্যার জন্য এই ভবনটি কোন একসময় যথেস্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। পরে অবশ্য কর্তৃপক্ষ এগুলো বন্ধকরার ব্যাবস্থা করে।
এর পরে ১৯৫০ সালে মানুষ হঠাৎ করে উচ্চ ভবন নির্মান বন্ধ করে আর একটা অদ্ভুৎ স্ট্রাকচার নির্মান শুরু করে। সেটা হচ্ছে রেডিও বা টিভির সম্প্রচার টাওয়ার। এই টাওয়ার গুলো হচ্ছে মানুষের দ্বারা নির্মিত তৎকালিন পর্যন্ত সবধরনের স্ট্রাকচারের মধ্যে অন্যতম উচ্চতম। তবে এগুলো কোন ভবনের মতন হয় না। এগুলো শুধু টাওয়ারের মতন করে নির্মান করা হয় যত উচুতে যাওয়া যায় ততই বিশাল এরিয়া কাভার করা যায়। এই রেকর্ডটা আছে পোলেন্ডের Warsaw radio mast নামক একটা রেডিও টাওয়ারের। এটার উচ্চতা ছিল প্রায় ২১১৮ ফিট। ১৯৯১ সালের দিকে এসে প্রচন্ড বাতাসে এটার স্ট্রাকচার ফেইল করে ধংস্ব হয়ে পরে যায়। কারন ছিল বাতাসের জোরে বেইজটা পুরো স্ট্রাকচারটির নারাচারা সহ্য করতে পারেনি।
এধরনের একটা মাত্র স্ট্রাকচার এখন পর্যন্ত দারিয়ে আছে আর সেটা হচ্ছে KVLY-TV mast যেটি আমেরিকার ডেকোটাতে অবস্থিত। এই স্ট্রাকচারটি এখনো দারিয়ে আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে এই সকল কিছুর সব ধরনের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে একটা বিল্ডিং। আর সেটির নাম হচ্ছে Burj Khalifa। দুবাইতে অবস্থিত এই ভবনটি মাটি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত উচু। আমি প্রথম যখন এই ভবনটার উচ্চতা সম্পর্কে স্টাডি করি পুরোই অবাক হয়ে যাই। এদিকে শুনতেছি সৌদিরা রিয়াদে এর চেয়ে উচু কিংডম টাওয়ার বানাতে যাচ্ছে। এছারা চায়না, আমেরিকা সহ অনেকগুলো দেশ এই ধরনের ভবন বানাবে।
এবার আসি মুল কথায়। মাটি থেকে যদি এক কিলোমিটার পর্যন্ত যাওয়া যায় তবে ঠিক কতদুর পর্যন্ত আমরা নির্মান করতে পারবো??
আপনার হাতের কাছে যদি একটা গোল বল থাকে সেটা হোক বাচ্চাদের। সেটা হাতে নিয়ে মনে মনে একটু ভেবে বলেন তো দেখি আপনার হাতের বলটি যদি পৃথিবী হয় আর মহাকাশে থাকা কৃত্তিম উপগ্রহ বা Satellite গুলো পৃথিবী থেকে ঠিক কতদুরে থাকবে?? আপনার হাতের আঙ্গুল ব্যাবহার করুন তো দেখি দুরত্বটা দেখানোর জন্য। আমি জানি আপনার আন্দাজ মোটেই সঠিক হচ্ছে না। একচুয়ালি আপনি যা ভাবছেন বিষয়টা তার চেয়ে একটু জটিল। হিসাব করলে দেখা যাবে যে স্যাটেলাইটগুলো যে দুরুত্বে থাকে সেটা যদি আপনার আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে যান তবে আপনার আঙ্গুল বলের গায়ে লেগে যাবে। মানে কয়েক মিলিমিটারের মতন হবে আরকি।
ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন সম্পর্কে তো জানেন। না জানলে জেনে রাখুন নাসা এধরনের একটা বিশাল স্টেশন তৈরি করেছে পৃথিবীর কক্ষপথে যেটি এতটাই বিশাল যে রিতিমত সেখানে বেশ কয়েকজন লোক নিয়মিত অফিস করেন। যাকগে সে কথা। আসল কথায় আসি। এই স্টেশনগুলো পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরপাক খাচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু সেই ঘুরপাক খাওয়ার গতি অত্যান্ত বেশি। এতটাই বেশি যে যেখানে আমরা ২৪ ঘন্টায় একবার সুর্যউদয় এবং সুর্যাস্ত দেখি সেখানে মহাকাশের স্পেস স্টেশন বা স্যাটেলাইটে কর্মরত লোকজন দেখে ১৬ বার। মানে ২৪ ঘন্টায় তাদের ১৬ দিন হিসেব হয়। বিষয়টা অনেক জটিল। তবে আপনার টেনশনের কোন কারন নেই কারন আপনি নিজেও এই জিনিষটা দেখতে পারেন মানে একদিনে দুইবার সুর্যাস্ত এবং সুর্যোদয় দেখতে পারেন।
এই বিষয়টা দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভবন দুবাইয়ের Burj Khalifa তে। এই ভবনটার নিচে সুর্যাস্তের সময় দারিয়ে আপনি দেখলেন সুর্য ডুবেগেছে। এবার আপনি খুব উচ্চক্ষমতার লিফটে উঠে চলে গেলেন ভবনের একদম উপরে। সেখানে গিয়ে আপনি সম্পুর্ন অবাক হয়ে যাবেন কারন আপনি সুর্যাস্ত আবার দেখতে পাবেন। একই ঘটনা ঘটবে এই ভবনের বেলায় যখন সুর্যোদয় ঘটে। অসাধারন তাইনা। এর কারন হচ্চে অতিরিক্ত উচ্চতা। এই বিষয়টা নিয়ে সবচেয়ে মজার সমস্যায় পরে দুবাই কর্তৃপক্ষ রমজানের সময়। কারন ভবনের নিচে ইফাতােরের সময় হলেও ভবনের উপরে তখনও সুর্য দেখা যায়। তাই দুবাই ইসলামিক সেন্টার এই বিল্ডিং এর জন্য একটা সুন্দর নিয়ম করে দিয়েছে। ভবনের ৮০ তালার নিচে যারা থাকবে তারা ৩ মিনিট আগে ইফতার করবেন এবং ৮০ তালার উপরে যারা থাকবেন তারা ৩ মিনিট দেরি করে ইফতারি করবেন। মজার বিষয় তাই না।
এই বিষয়টা দেখার জন্য আপনাকে যে দুবাইতে যেতে হবে এমন কোন কথা নেই। আপনি চাইলে আমাদের কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সুর্যাস্ত এবং সুর্যোদয় দুইবার দেখতে পারবেন। যাস্ট সুর্যাস্তের সময় প্রথমে আপনি বালির উপরে উপুর হয়ে শুয়ে পরুন। ঠিক যখন দেখবেন আপনার চোখথেকে সুর্যের সর্বশেষ লাল অংশটুকুন চলে যাচ্ছে সাথে সাথে ধুপ করে দারিয়ে পরুন। দেখবেন সুর্যাস্ত আবার দেখা যাচ্ছে। এটার কারন হচ্ছে পানির কিছু মৌলিক ধর্মের কারনে এটা একেবারে সমতল থাকে। তাই সাধারনত মাটিতে উচু নিচুর কারনে যা দেখা যায় না সমুদ্রে সেটা খুবই সুন্দর ভাবে দেখা যায়।
মজার বিষয় হচ্ছে আপনি যদি আপনার চোখের অবস্থান নির্নয় করে শোয়া অবস্থায় এবং দারানো অবস্থার মধ্যে চেখের উচ্চতা এবং একটা স্টপওয়াচ দিয়ে যদি দুইবার সুর্য ডোবার সময়ের ব্যাবধান নির্নয় করতে পারেন তাবে আপনি একটা সুত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ মেপে ফেলতে পারবেন। XKCD নামক একটা ওয়েবসাইট এই বিষয়টাকে আরো দুরত্ব পর্যন্ত নিয়েছে। তারা তাদের ওয়েবসাইটে এই সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে পরিক্ষা নিরিক্ষা এবং হিসাব করার জন্য সহযোগিতা করবে। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন। ওরা আমার বর্ননা করা এই পুরো প্রসেসটা সুন্দর করে ছবি সহ সহজ করে বর্ননা করেছে এবং আপনি খুবই সুন্দর ভাবে চাইলেই নিজেই এই পরিক্ষাটা করতে পারেন। মানে একই দিনে দুইবার সুর্যাস্ত দেখতে পারবেন। বাচ্চাদের নিয়ে এইটা করতে পারেন তারা খুবই আগ্রহি হবে এবং জিনিষটা শিখতে পারবে।
ওকে আমরা আমাদের ঠিক যতটুৃকুন ইচ্ছে ততটুকুন পর্যন্ত নির্মান করতে পারবো। কিন্তু করছি না কেন??
এই প্রশ্নের উত্তরা জানতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে বিল্ডিং যত উচু হবে তার নিজস্ব ভর ততই বারবে। আর এই নিজস্ব ভরের কারনে ভবনটি একসময় তার বেইজের সাপোর্টিং স্ট্রাকচার ফেইল করবে মানে ধ্বসে পরে যাবে। কিন্তু বিজ্ঞানিরা গবেষনা করে অসাধারন একটা জিনিষ আবিস্কার করেছেন। তারা দেখছেন পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে যদি কোন কিছুকে ৩৫০০০ বা পয়ত্রিশ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায় তবে সেখানে যাওয়ার পরে এই স্ট্রাকচারটা অন্য আর একটা ফোর্স অনুভব করবে। আর সেটা হচ্ছে টান বল। এই উচ্চতাকে বলা হয় geostationary orbit। এই বলটা এতটাই বেশি হবে যে উক্ত স্ট্রাকচার একদম হঠাৎ করে শুন্য বল দেয়া শুরু করবে পৃথিবীতে অবস্থিত তার বেইজের উপরে।
মুলত এটাই হচ্ছে স্পেস এলিভেটর বা মহাকাশ লিফট নির্মানের মুল ভিত্তি। যদি কোন ভাবে একটা ক্যাবলকে নিয়ে যদি আপনি এই উচ্চতায় বসিয়ে দিতে পারেন তবে আপনি খুবই সহজভাবে মহাকাশে যাওয়ার জন্য একটা লিফ্ট নির্মান করে ফেলতে পারবেন। এর পরে সেই লিফ্ট দিয়ে উঠে গিয়ে আপনি আপনার ঘর বাড়ি সহ সবকিছু সেখানেই নির্মান করতে পারবেন। মহাকাশে কোন কিছু নির্মানের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে সেখানে আপনার স্ট্রাকচারের বেইজ বা ভিত্তি নিয়ে ভাবতে হবে না। যাই বানাবেন ভাসতে থাকবে ভরহিন ভাবে। কি মজা তাই না।
তবে এইধরনের কোন শক্ত ম্যাটেরিয়ালস এখন পযন্ত বানিজ্যিক ভাবে নির্মিত হয়নি। নাসা বিভিন্ন ধরনের ন্যানোটিউব নিয়ে গবেষনা করছে এবং ধারনা করা হচ্ছে এই ন্যানোটিউব টেকনলজির কাজ বা প্রজেক্ট যদি যদি সফলভাবে সম্পন্ন হয় তবে ভবিষ্যতে বা আগামি শতকে আমরা এধরনের একটা লিফ্ট বানিয়ে ফেলতে পারবো। ফলে মহাকাশে যাওয়ার জন্য আর আমাদেরকে রকেট ব্যাবহার করতে হবে না। বরঞ্চ আমরা খুবই সহজ ভাবে অন্যান্য গ্রহে বসতি স্থাপন করতে পারবো।
এছারাও আরও কিছু সমস্যা আছে। যেমন একটা ক্যাবল যদি পৃথিবী থেকে মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে তবে সেই ক্যাবলটা তো পৃথিবীর সাথে সাথে ২৪ ঘন্টা ঘুরতে থাকবে। এখন মহাকাশে প্রচুর রকমের জঞ্জালে ভর্তি। কারন আমরা গত ৬০ বছরে কমপক্ষে ৪০ হাজার বিভিন্ন ধরনের বস্তু মহাকাশে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট, মিসাইল সহ অনেক অনেক জিনিষ। এর মধ্যে বেশিরভাগই ধংস্ব প্রাপ্ত হয়ে আবর্জনার মত ভাসছে। এখন স্পেস এলিভেটর নির্মান করার পরে সেটিতো পৃথিবর সাথে সাথে একই স্পিডে ঘুরতে শুরু করবে। তখন এই জঞ্জালগুলো তো নিয়মিত এটাতে আঘাত করবে এবং একসময় ভেঙ্গে ফেলবে। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এর পরের সমস্যা হচ্ছে পৃথিবীতে প্রত্যেকটা দেশের বিমান সংস্থার জন্য কিছু নির্দিস্ট রুট বা গতি পথ থাকে। পৃথিবীর ঘুর্ননের সাথে সাথে এই ক্যাবেলের ঘুর্ননেরও একটা গতি পথ থাকবে। তাই প্রত্যেকটা দেশের বিমান সংস্থাকে এই ক্যাবলের সাথে কলিউশন হয় এমন গতিপথ পরিহার করতে হবে। তবে এই সমস্যার সবচেয়ে দারুন সমাধান হচ্ছে কেবলটা সমুদ্রে মাঝখানে স্থাপন করা। তাহলে আর কোন দেশের কোন সমস্যা হবার কথা না। যদিও আমেরিকার প্রবলেম হবে। সেটা কিভাবে?? সেটা না অন্য একদিন আলোচনা করবো।
আর একটা সমস্যা আছে। আচ্ছা এটা বোঝার জন্য আবার সেই বলটার কাছে যাই। মনে করেন বলটা পৃথিবী আর সেই পৃথিবীর উপরে আপনি একটা লম্বা কাঠি দার করিয়ে স্পেস এলিভেটর বোঝাচ্ছেন। এখন পৃথিবী নামক বলটাকে যদি আপনি একটা ঘুরনি দেন যার গতি প্রতিঘন্টায় ২ কিলোমিটার তাহলে ওই কাঠির বাহিরের মাথাটার গতি হবে প্রতি ঘন্টায় ৪ কিলোমিটার। একই সিস্টেমে পৃথিবী থেকে মহাকাশে যাওয়ার পরে ওই কেবলের মহাকাশে থাকা মাথার ঘুর্নন গতি এতই ভয়ানক দ্রুহ হবে যে সেটা আপনার আমার কল্পনার বাইরে। বিজ্ঞানিরা হিসাব করেছেন এই হিসাবে যে যদি কোন ক্যাবল পৃথিবীথেকে ৫০ হাজার কিলোমিটার দুরে নিয়ে হয় যেটা অবশ্যই নিতে হবে একটা স্পেস এলিভেটর বানাতে তাবে সেইটার উপরের মাথার ঘুর্নন স্পিড হবে প্রতি সেকেন্টে ১১.২৮ কিলোমিটার। যে স্পিডে আপনি খুবই সজে পৃথিবীর অভিকর্ষ বলকে বা গ্রাভিটিকে ফাকি দিয়ে মহাকাশে চলে যেতে পারবেন।
তো প্রশ্ন করতে পারেন ঠিক কি সুবিধা পাওয়া যাবে যদি কোন দেশ এধরনের কোন কিছু একটা বানাতে পারে। ঠিক সুবিধা বলেত ওই বলতে পারেন ওই দেশ বা ওই ব্যাক্তি পুরো পৃথিবীর মহাকাশ রিলেটেড যাবতিয় কর্মকান্ড কন্ট্রোল করতে পারবেন। এবং সত্যিকার অর্থে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনি ব্যাক্তি বা দেশে রুপান্তির হবেন। কারন বর্তমানে এক পাউন্ড ওজনের কোন কিছুকে মহাকাশে পাঠাতে খরচ হয় ১১ হাজার ডলার তখন হয়ত এই খরচটা নেমে যাবে মাত্র ১০০ ডলার বা আট হাজার টাকায়। তার মানে যোকোন কোটি পতি মহাকাশে নিজর জন্য একটা আলাদা বাড়ি বানিয়ে সেখানেই বাস করতে পারবেন। অথবা চাইলে একটা হোটেল বানানো যেতে পারে। চাইলে সেখানে বানানো যেতে পারে বিশাল কোন স্পেশশিপ যেটি গ্রহথেকে গ্রহান্তরে ঘুরতে পারবে।
অনেক ধন্যবাদ আমার লেখাটি পরার জন্য। আরো যদি কিছু জানার প্রয়োজন হয় তবে কমেন্টস এ উল্লেখ করুন। সেখানে আলোচনা করে আমরা জেনে নেবো বিষয়টি। ধন্যবাদ।
If you have any doubt , let me know.