বাংলাদেশে ভুমিকম্পের প্রভাবঃ
বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্প-প্রবণ এলাকা, যেখানে ভূমিকম্প বিভিন্ন ধরণের সন্দেহজনক অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। এই দেশে প্রায়ই ভূমিকম্প ঘটে, তার অধিকাংশ ক্ষেত্রগুলোতে তা অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে অনুভব করা হয়। তবে, প্রতি বছর মানুষের ক্ষতি ও ক্ষতিগ্রস্ত সম্পদের প্রকার এবং পরিমাণ পরিবর্তন করতে পারে। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের প্রবল প্রভাবের উপর অস্থিরতা ও ভৌত প্রকৃতির কারণে জনগণের জীবন ও সম্পদের জন্য প্রস্তুতি করা গুরুত্বপূর্ণ।
ভূমিকম্প :
প্রকৃতির নিয়মে ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট ভূআলোড়নের কারণে ভূ-পৃষ্ঠের কোনো কোনো অংশ হঠাত্ কেপেঁ উঠলে তাকে আমরা বলি ভূমিকম্প৷ এধরনের কম্পন প্রচন্ড,মাঝারি বা মৃদু হতে পারে৷ পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ হাজার ভূমিকম্প হয়৷ কিন্তু এর বেশিরভাগই মৃদু ভূমিকম্প বলে সাধারণত আমরা অনুভব করি না৷ পৃথিবীর ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে (seismic zone) বাংলাদেশ অবস্থিত বলে এদেশে মাঝে মাঝে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷ প্রায় একশ বছর আগে ১৮ঌ৭ সালে এদেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়৷ ১ঌঌ৭ সালের ২১শে নভেম্বর চট্টগ্রাম ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রচন্ড এক ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এছাড়া ১ঌঌঌ সালে জুলাই-আগস্ট মাসে মহেশখালী ও পার্শ্ববতী এলাকায় ৪ দফা ভূমিকম্প হয়৷ এসব ভূমিকম্পের ফলে বেশ কিছু মানুষ মারা যায় এবং অনেক বাড়িঘর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়৷
সুনামি :
পৃথিবীতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ছয় হাজার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷ তবে বেশিরভাগই মৃদু আকারে হয় বলে সাধারণত তা অনুভূত হয় না৷ আবার অনেকসময়ই সমুদ্রের তলদেশে ভূকম্পন সংঘটিত হয় যাকে সুনামি বলা হয়৷ যদিও বেশিরভাগ সময় স্থলভাগে এর প্রভাব অনুভূত হয় না৷ কিন্তু অনেকসময় সুনামির কারণে প্রচন্ড জলোচ্ছ্বাস হয় এবং উপকুলীয় লোকজন, সমুদ্রে কর্মরত ব্যক্তিব॔গ ও জেলে-নৌকাসমূহ বিপদের সম্মুখীন হয়৷ গতবছর অথাᐂত্ ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে৷
ভূমিকম্প কেন হয় :
ভূবিজ্ঞানীগণ ভূমিকম্পের বিভিন্ন কারণ বা উত্স চিহ্নিত করেছেন ৷ তারমধ্যে প্রধান হচ্ছে:
ক) হঠাত্ আন্দোলন বা টেকোনিক ভূমিকম্প
খ) আগ্নেয়গিরির কারণে ভূমিকম্প
গ) মানুষ সৃষ্ট ভূমিকম্প
ভূমিকম্প পরিমাপ :
যে স্থান বা জায়গায় ভূমিকম্পের উত্পত্তি হয় তাকে এর কেন্দ্র বলে এবং কেন্দ্র থেকে তা ঢেউ বা তরঙ্গের মতো চারদিকে প্রসারিত হয়৷ এধরনের তরঙ্গ সিসমোগ্রাফ (Seismograph) বা ভূকম্পন লিখনযন্ত্রের সাহায্যে মাপা হয়৷ সাধারণত অনেক ভূমিকম্প আমরা অনুভব করি না৷ ভূকম্পন যখন মাত্রাধিক হয় এবং ঘরবাড়ি, দালানকোঠা,গাছপালা ইত্যাদি যখন নড়তে থাকে তখন আমরা অনুভব করি৷
ভূমিকম্পের মাত্রা দু’ভাবে পরিমাপ করা হয়-
# তীব্রতা (Magnitude)
# প্রচন্ডতা বা ব্যাপকতা (Intensity)
ভূমিকম্পের তীব্রতা সাধারণত রিখটার স্কেলে মাপা হয়৷ আর রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ এর উপরে উঠলে যথেষ্ট বিপদের আশন্কা রয়েছে বলে মনে করা হয়৷
রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা :
রিখটার স্কেলের মাত্রা ১ বৃদ্ধি পেলেই ভূকম্পনের মাত্রা ১০ থেকে ৩০ গুণ বেড়ে যায়৷
প্রচন্ডতা বা ব্যাপকতা :
ভূমিকম্প হওয়ার পর এর ক্ষয়ক্ষতির মধ্যদিয়ে ব্যপকতাকে মাপা হয়৷ প্রচণ্ডতার দিক দিয়ে একে ভয়াবহ (violent), প্রচন্ড (severe), মাঝারি (moderate), মৃদু (mild) ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়৷
ভূমিকম্পপ্রবন এলাকা : বাংলাদেশে ১ঌঌ৩ সালে ভূমিকম্প বলয় মানচিত্র তৈরি হয়েছে৷ সিসমিক রিস্ক জোন হিসাবে বাংলাদেশকে প্রধান তিনটি বলয়ে ভাগ করা হয়েছে৷ বলয়গুলো হলো :
প্রথম বলয় (প্রলয়ন্কারী ভূমিকম্প) : বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর এই বলয়ে অবস্থিত এবং এই বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ ধরা হয়েছে৷
দ্বিতীয় বলয় (বিপদজনক ভূমিকম্প) : ঢাকা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও রাঙ্গামাটি এতে অবস্থিত এবং এখানে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ ধরা হয়েছে৷
তৃতীয় বলয় (লঘু অঞ্চল) : উপরোক্ত এলাকাগুলো ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকাগুলো যা মোটামুটি নিরাপদ সেগুলো এবলয়ে অবস্থিত৷ এসব অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ এর নিচে ধরা হয়েছে৷
বাংলাদেশে ভূমিকম্প-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহ :
ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো :
বাংলাদেশে ভূমিকম্প সবসময় না হলেও এর আশংন্কা রয়েছে৷ গত কয়েকবছরে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রচন্ডতা ও ব্যাপকতা লক্ষ্যণীয়৷ যেমন,
২০০১ সাল : ঐ বছর ২৬শে জানুয়ারি গুজরাটের ভয়াবহ ভুমিকম্পে প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়৷ রিখ্টার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.ঌ৷ এই ভূমিকম্পের কারণে শুধু ভারত নয় পাকিস্তানেরও বেশকিছু অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷ এমনকি ঐ ভূমিকম্প বাংলাদেশের বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা এলাকাতেও মৃদুভাবে অনুভূত হয়৷
১ঌঌঌ সাল : জুলাই-আগস্ট মাসে মহেশখালী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ৪ দফা ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷
১ঌঌ৭ সাল : ২১শে নভেম্বর ১ঌঌ৭ চট্টগ্রাম ও তত্সংলগ্ন এলাকায় এক প্রচন্ড ভূমিকম্পে আঘাত হানে সেসময় একটি পাঁচতলা ভবন মাটির নিচে ডেবে যায় ৷
১৮ঌ৭ সাল : প্রায় একশ বছর আগে ১৮ঌ৭ সালে এ দেশের পূর্বাঞ্চলে যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল তা ভুলবার মতো নয়৷ এমন কি কোনো কোনো ভূমিকম্পে নদ-নদীর গতিপথ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে গেছে৷
এছাড়া ভূমিকম্পের কারণে গত কয়েক বছরে তাইওয়ান, তুরস্ক, ভেনিজুয়েলা, জাপান, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের জনজীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে৷ কোনো কোনো জায়গায় বার বার ভুমিকম্পের ঘটনাও ঘটেছে৷ যেমন তাইওয়ানে একবার প্রচন্ড ভুমিকম্প হওয়ার পরই আবার ভূমিকম্প হয়েছে৷
বিগত দেড় শতাব্দীতে এ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো :
ভূমিকম্প হলে আমাদের যেসব ক্ষতি হতে পারে :
আমাদের মনে রাখা দরকার যে, অন্যান্য প্রাকৃতিক দুযোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা ইত্যাদির মতো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার কোনো পদ্ধতি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি৷ এটা অত্যন্ত আকস্মিকভাবে ঘটে এবং এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তুলনামূলকভাবে বেশি৷ ভূমিকম্পের কারণে যেধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে তা হলো :
বিভিন্ন পাকা ভবন ও ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে বহুসংখ্যক মানুষ মৃতু᐀বরণ করে,
অনেকে আহত হয় ও পঙ্গু হয়ে যায়৷ ঘরবাড়ির নিচে বহু লোক আটকা পড়ে৷
ঘরবাড়ি, ধনসম্পদ ও যাতায়াত ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়৷
চুলার আগুনে, বৈদু᐀তিক শর্টসার্কিট হওয়ায়, পেট্রোল-কেরোসিন ইত্যাদি বা রাসায়নিক পদার্থসমূহের মিশ্রণে আগুন লেগে অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয় এবং তাতে বহুসংখ্যক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়, এমনকি মারাও যায়৷
গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী ব্যাপকভাবে মৃতু᐀বরণ করে এবং গাছপালা ও ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷
রাস্তা-ঘাটের ক্ষতি; ব্রিজ-কালভার্ট-সেতু ইত্যাদি ধ্বংস হয় এবং রাস্তা-ঘাটে গাছপালা, লাইটপোস্ট ইত্যাদি পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়৷
বৈদু᐀তিক তার বিচ্ছিন্ন হয়ে, বৈদু᐀তিক খুঁটি পড়ে বা ভেঙ্গে গিয়ে, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে আলোর স্বল্পতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি হয়৷
হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে চিকিত্সা ও সেবা কাজ বিঘ্নিত হয় এবং পরিবহণ গাড়ি ও যন্ত্রাদি ধ্বংস হয়ে পরিবহণ ব্যবস্থার মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে৷
অনেক সময় সমুদ্র উপকূল ও বড় নদী-তীরে জলোচ্ছ্বাস হয়৷
অনেক সময় নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয় এবং পুকুর, নদী-নালা শুকিয়ে যায়৷
অনেক সময় উঁচুভূমি ডেবে গিয়ে জলাশয়ে পরিণত হয় এবং মাঠে ফাটল সৃষ্টি হয়৷
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে কি করতে পারি :
বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা ভূমিকম্প জোনে অবস্থিত তাই সর্বদা এদেশে ভূমিকম্পের আশন্কা রয়েছে৷ এজন্য আমাদের ভূমিকম্পের ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার৷ আমরা ভূমিকম্পকে ঠেকাতে না পারলেও এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি৷ দুইভাবে এই প্রস্তুতি নেয়া যায়-
১) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায় এবং
২) সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় ৷
ভূমিকম্প মোকাবেলায় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে করণীয় পূর্বপ্রস্তুতিসমূহ :
ভূমিকম্প সম্পর্কে ধারণা করুন;
আপনার ঘরবাড়ি শক্ত করে তৈরি করুন;
পুরানো ঘরের খুঁটি ও ভিত মেরামত করুন;
শক্ত মাটিতে ঘর বা ভবন নির্মাণ করুন৷
কখনই গর্ত বা নরম মাটির উপর বাড়ি বা ভবন নির্মাণ করবেন না;
পাকা ভবনের শক্ত ভিত দিন এবং প্রয়োজনে দালান বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর পরামর্শ প্রহণ করুন৷
ভবনের উচ্চতা ও লোডের হিসাব অনুযায়ী ভবনের ভিত্তি দিন৷ এমএস রড ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন ;
অবকাঠামোতে রিইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার করুন;
আপনার বাড়ি বা ভবনটি পার্শ্ববর্তী বাড়ি বা ভবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে নির্মাণ করুন;
বাড়িতে বৈদু᐀তিক লাইন ও গ্যাস লাইন অত্যন্ত নিরাপদ ও সতর্কভাবে লাগান;
গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পর নিভিয়ে ফেলুন এবং ভূমিকম্পের সময় গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখুন কেননা ভূমিকম্পের সময় চুলা উল্টে আগুন ধরে যেতে পারে;
বাড়িতে সদস্যের সংখ্যানুযায়ী মাথার হেলমেট কিনে রাখুন যাতে ভূমিকম্পের সময় ব্যবহার করা যায়;
খাট, টেবিল ইত্যাদি শক্ত করে তৈরি করুন যাতে বিপদের সময় তার নিচে আশ্রয় নেওয়া যায়;
ঘর বা পাকা ভবনের একাধিক দরজা রাখুন যাতে বিপদের সময় দ্রুত বের হওয়া যায়;
ব্যাটারিচালিত রেডিও, টর্চলাইট ও প্রাথমিক চিকিত্সার সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখুন;
পরিবারের সবাইকে বিদু᐀তের মেইন সুইচ,গ্যাসের চুলা,বাল্ব ইত্যাদি বন্ধ করা শেখান;
টিনের ঘর হলে চারের টুঁই – এর সাথে কয়েকটি লম্বা ও শক্ত দড়ি বেঁধে রাখুন যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন;
ভারী কোনো জিনিস উপরে তুলে না রেখে মেঝের কাছাকাছি রাখুন;
পরিবারের সকল সদস্যকে ভূমিকম্পের ঝুঁকি ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত রাখুন;
সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে ভূমিকম্প সম্পর্কিত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করুন এবং অপরকেও অংশগ্রহণ করতে বলুন;
ভূমিকম্প সংক্রান্ত স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য হতে চেষ্টা করুন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ রাখুন৷
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে করণীয় :
ভুমিকম্পের ঝুঁকি সম্পর্কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে আলোচনা করা;
সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা;
স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রোর সহযোগিতায় ভূমিকম্প সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা;
ভূমিকম্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নির্ধারণ করা এবং তা পালনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করা;
পাকা ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করার জন্য সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা এবং বিল্ডিং কোড সাধারণ মানুষ যাতে বুঝতে পারে তা নিশ্চিত করা;
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন নির্মাণে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা;
ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা বিষয়কে স্কুল কলেজের অবস্থান অনুযায়ী পাঠ্যসূচির অর্ন্তভুক্ত করা;
তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুকিঁপূর্ণ এলাকার জনগণকে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা;
মাটির দেয়াল দিয়ে বাড়ি তৈরি করতে নিরুত্সাহিত করা;
ভূমিকম্পের পরে প্রয়োজনীয় উদ্ধার কাজের জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রাদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা;
উদ্ধার কাজে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন যন্ত্রাদি চালনার জন্য চালক নির্বাচন ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান;
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে জনগণের পূর্বপ্রস্তুতি ও করণীয় সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করা;
প্রয়োজনীয় সংখ্যক যানবাহন সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং এ᐀ম্বুলেন্স – এর ব্যবস্থা রাখা;
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদির সেবা ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখা;
ঝুকিঁপূর্ণ এলাকার সকলের ব্লাড গ্রুপ জেনে রাখা এবং ব্লাড ব্যাংকের ব্যবস্থাসহ রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা;
শক্তিশালী বেসামরিক প্রতিরক্ষা ও অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী গঠন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহসহ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা;
বেসরকারি পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ও কমীᐂবাহিনীকে ভুমিকম্প সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা;
রেডিও, টেলিভিশন ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে ভূমিকম্পে জনগণের করণীয় ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত প্রচার করা;
প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহে রাখা;
উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারীদেরকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও দায়িত্ব প্রদান করা;
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে দায়িত্ব দিয়ে রাখা যাতে তারা তাত্ক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন৷
ভূমিকম্পের সময় কী কী করব :
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে করণীয়:
ভূমিকম্পের প্রথম ঝাঁকুনির সাথে সাথে পরিবারের সকলকে নিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিন;
ঘরে হেলমেট থাকলে দ্রুত নিজে মাথায় দিন এবং অন্যদেরকে মাথায় দিতে বলুন;
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সম্ভব হলে প্রতিবেশীকে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য বলুন;
দ্রুত বৈদু᐀তিক সুইচ ও গ্যাস সুইচ বন্ধ করে দিন;
ম্যাচ বা কোনো প্রকার আগুন জ্বালাবেন না;
কোনো কিছু সঙ্গে নেওয়ার লোভে অযথা সময় নষ্ট করবেন না;
বৈদু᐀তিক তার বা ইমারতের কাছে থাকবেন না;
ঘর থেকে বের হতে না পারলে এবং আপনার বাসস্থান পাকা ভবন (শুধু ইটের গাঁথুনি) হলে ঘরের কোণে আশ্রয় নিন৷ ভবনটি কলাম এবং বীম দিয়ে তৈরি হলে কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিন;
আপনার বাসস্থান আধা-পাকা বা সম্পূর্ণ টিন দিয়ে তৈরি হলে এবং ঘর থেকে বের হতে না পারলে শক্ত খাট বা চৌকির নিচে আশ্রয় নিন অথবা উপরের টুঁই এর সাথে পূর্বের বেঁধে রাখা দড়ির সাথে ঝুলে থাকুন;
ভূমিকম্প রাত্রে হলে বের হতে না পারলে আপনি সজাগ হওয়ার সাথে সাথে ঘরের কোণে, কলামের গোড়ায় অথবা শক্ত খাট বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন অথবা টিনের ঘর হলে টুঁই-এর সাথে ঝোলানো দড়ির সাথে ঝুলে থাকুন;
ভূমিকম্পের সময় বিছানায় শোয়া অসুস্থ রোগীদের বের করা সম্ভব না হলে খাটের নিচে শুইয়ে দেয়া;
রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় রিক্সা, ট্রেন, বাস বা অন্যান্য যানবাহণে থাকলে তত্ক্ষণাত্ তা যথাস্থানে দাঁড় করিয়ে রেখে এর ভেতরেই অবস্থান করুন;
বহুতল ভবন হলে এবং উপরের তলায় অবস্থান করলে কম্পন থামা পর্যন্ত অপেক্ষা করাই ভালো;
কম্পন থামার সাথে সাথে সিড়ি দিয়ে বেরিয়ে পড়ুন ,তবে লিফট ব্যবহার না করাই ভালো৷
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে করণীয় :
ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত হতে হবে;
প্রধান বা আঞ্চলিক বৈদু᐀তিক সুইচ দ্রুত বন্ধ করে দিতে হবে;
প্রধান বা আঞ্চলিক গ্যাস নির্গমণ সুইচ দ্রুত বন্ধ করে দিতে হবে;
দুর্ঘটনার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে দ্রুত উদ্ধারকারী দল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদি প্রেরণের তাত্ক্ষনিক ব্যবস্থা ও নির্দেশ দিতে হবে;
প্রয়োজনীয় ত্রাণ, ওষুধ, ডাক্তার, নার্স ইত্যাদি প্রেরণ করতে হবে; বিদু᐀ত্ সরবরাহ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে;
হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদিতে তাত্ক্ষনিক চিকিত্সা ব্যবস্থার বিষয় নিশ্চিত করতে হবে;
রাস্তা-ঘাটের প্রতিবন্ধকতা দ্রুত দূর করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে;
প্রয়োজনে অস্থায়ী বা ভ্রাম্যমান হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে;
তাত্ক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় যানবাহণ ও এ᐀ম্বুলেন্স প্রেরণ করতে হবে:
তাত্ক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য জরিপ দলকে নির্দেশ দিতে হবে;
পরিস্থিতি ভয়াবহ ও আয়ত্বের বাইরে চলে গেলে বাইরের সাহায্যের জন্য আবেদন জানাতে হবে;
ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাত্ক্ষণিক নির্দেশ প্রদান করতে হবে;
রেডিও এবং টেলিভিশনে সম্প্রচারের জন্য সঠিক তথ্য সম্বলিত খবর প্রেরণ করতে হবে৷
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে যা করণীয় :
নিজের পরিবার পরিজন ও সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হলে যতদূর সম্ভব নিজেই উদ্ধার ও সেবা কাজে নিয়োজিত হোন এবং সম্ভব না হলে দ্রুত উদ্ধারকারীদের সাথে যোগাযোগ করুন;
দ্রুত উদ্ধার কাজ, প্রাথমিক চিকিত্সা ও সেবা কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন;
খালি পায়ে চলাফেরা করবেন না;
আগুন লাগলে নেভানোর চেষ্টা করুন ও দ্রুত ফায়ার ব্রিগেড ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগে খবর পাঠান;
সম্ভব হলে আশ্রয়, খাদ্য বস্ত্র ও বিশুদ্ধ পানির যোগান দিন;
প্রয়োজনে যানবাহণ ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা করুন;
আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও উদ্ধার, সেবা ও ত্রাণ কাজে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করুন ও নির্দেশ দিন;
আপনার এলাকার রাস্তাঘাটের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে সহযোগিতা করুন;
আইন-শৃঙ্খলা কাজে সরকারকে সহযোগিতা করুন;
স্বেচ্ছাসেবকদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দান করুন;
তথ্য সংগ্রহকারীদেরকে সঠিক তথ্য প্রদান করুন৷ সম্ভব হলে নিজেই তথ্য সংগ্রহ করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত প্রেরণ করুণ৷ অস্থায়ী আশ্রয়স্থল নির্মাণে সহায়তা দিন আহতদের শুশ্রুষার জন্য যথাস্থানে দ্রুত শুশ্রুষাকারী প্রেরণে সহযোগিতা করুন;
মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ/সত্কার করতে এবং মৃত গবাদি পশু মাটিতে পুঁতে ফেলার অথবা পুড়িয়ে ফেলার কাজে সহযোগিতা করুন;
লাশ পচে যেন দুᐂগন্ধ না ছড়ায় এজন্য জীবাণুনাশক ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা করুন;
আহত, অসহায় ও সর্বহারা মানুষকে সান্ত্বনা দিন;
পুরানো ঘরবাড়ি, মেরামত করুন ও নতুন বাসস্থান নির্মাণে সহযোগিতা করুন;
রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ ও সেবা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও পুননির্মাণ কাজে সাহায্য ও সহযোহিতা করুন;
ত্রাণ সামগ্রী সুষ্ঠুভাবে বিতরণে সহযোগিতা করুন; দ্রুত ফলনশীল ফসলের আবাদ করুন;
মেরামত ও পুর্নগঠন করে পরিবহণ ব্যবস্থা দ্রুত চালু করুন;
দ্রুত বিদু᐀ত্, জ্বালানি তেল ও গ্যাস সংকট দূর করতে সহায়তা করুন;
প্রয়োজনে অস্থায়ী ব্যবস্থা চালু করতেও সহায়তা করুন;
বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ ও সরবরাহে সহায়তা করুন;
ওষুধ, রক্ত ও চিকিত্সা সরঞ্জামাদি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সহায়তা করুন৷
সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনসমূহের করণীয় :
দ্রুত উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে প্রেরণ করা;
দ্রুত স্বেচ্ছাসেবক ও প্রাথমিক চিকিত্সক দল প্রেরণ করা;
প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি প্রেরণ করা;
আহতদের উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিত্সার ব্যবস্থা করা;
মৃত মানুষের ও গবাদি পশুর পরিচয় জেনে দ্রুত কবরস্থ/সত্কারের ব্যবস্থা করা;
দ্রুত ধ্বংসস্তুপ অপসারণের ব্যবস্থা করা;
হাসপাতাল ও ক্লিনিক ইত্যাদিতে আহতদের চিকিত্সা নিশ্চিত করা;
প্রয়োজনে অস্থায়ী ও ভাসমান হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা;
প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণ করা;
রক্ত, ওষুধ ও চিকিত্সাসামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করা;
ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও পুননির্মাণ করা;
ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা;
আইন-শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করা;
শিল্প-কলকারখানা দ্রুত চালু করার ব্যবস্থা করা;
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সরবরাহ নিশ্চিত করা;
ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও পুননির্মাণ করা;
ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন মেরামত এবং প্রয়োজনে নতুন যানবাহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
দমকল ও অগ্নিনির্বাপণ কাজের জন্য বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীকে তাত্ক্ষণিক নির্দেশ প্রদান করা;
প্রয়োজনে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদেরকে উদ্ধার, সেবা, চিকিত্সা ও ত্রাণ কাজে নিয়োজিত করা এবং ধ্বংসস্তুপ অপসারণে তাদের সহযোগিতা নেওয়া;
দেশী, বিদেশী ও স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাহায্য ও সহযোগিতা সমন্বয় করা;
সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসমূহের কমীবাহিনীকে উদ্ধার, সেবা, চিকিত্সা, আশ্রয় ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত করা৷
ভুমিকম্পের উদ্ধার কাজে ব্যবহারযোগ্য সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি :
ভূমিকম্পের পরে উদ্ধারকাজে ও ধ্বংসস্তুপ এবং রাস্তাঘাটের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে যেসব সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় সেগুলোর কয়েকটি নাম ও কাজ সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো :
ক্রেন: সাধারণভাবে বহনযোগ্য নয় এমন অধিক ভারী জিনিস স্থানান্তর/অপসারণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়৷
বুলডোজার: দালান-কোঠার ধ্বংসস্তুপ এবং রাস্তা-ঘাট পরিস্কার করার জন্য ব্যবহার করা হয়৷
ফর্কলিফট: দালান-কোঠার নিচে মানুষ বা অন্য কোনো দরকারী জিনিস উদ্ধারের জন্য এর প্রয়োজন হয়৷
ট্রাক্টর: ভুমিকম্প এলাকার ধ্বংসস্তুপ ও প্রয়োজনীয় ভারী জিনিস সরিয়ে নেওয়ার জন্য এর ব্যবহার করা হয়৷
চেইনপুলি: তাত্ক্ষণিকভাবে ক্রেন অথবা বুলডোজার পাওয়া না গেলে সেগুলোর কাজ চেইনপুলির মাধ্যমে করা হয়৷
পাওয়ার শোভেল: এক প্রকার বিদু᐀ত্চালিত কোদাল৷ হাতে চালিত কোদাল দিয়ে যেখানে তাড়াতাড়ি কাজ করা সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে এবং কোনো ভারী জিনিস মাটিতে বসে গেলে সেটা উঠাতে পাওয়ার শোভেল ব্যবহার করা হয়৷
ব্রেকডাউন ভ্যান: যেখানে সাধারণ পরিবহণ প্রবেশ কষ্টসাধ্য সেখানে এটা ব্যবহার করে উদ্ধার কাজ চালানো হয়৷
প্রাইমওভার: কোনো ভারী জিনিসকে এক স্থান থেকে অন্য কোনো কিছুর উপর দিয়ে অন্য স্থানে স্থানান্তরের জন্য প্রাইমওভার ব্যবহার করা হয়৷
মোবাইল জেনারেটর: ভূমিকম্প পরবতী জরুরি উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য বিদু᐀ত্ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি; তাই মোবাইল জেনারেটর ব্যবহার করে বিদু᐀ত্্ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়৷
হেভি জ্যাক: এর মাধ্যমে ভারী বস্তু সরানো যায় না৷ ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকার কোনো স্থানে যদি মানুষ বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস চাপা পড়া অবস্থায় আটকা থাকে তাহলে হেভি জ্যাক ব্যবহার করে তা উদ্ধার করা হয়৷
ওয়েবটবল: এর মাধ্যমে হাতুড়ির কাজ করা হয়৷ কোনো অধিক শক্ত জিনিসকে আঘাত করে স্থানচু᐀ত করার জন্য অথবা আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলার জন্য এটা ব্যবহার করা হয়৷ আবার কোনো খুঁটি মাটিতে পুঁতে দেয়ার জন্য ওয়েবটবল ব্যবহার করা যেতে পারে৷
পানিবাহী গাড়ি: ভূমিকম্পের পর জরুরিভাবে পানি সরবরাহের জন্য পানিবাহী গাড়ি ব্যবহার করা হয়৷
এম্বুলেন্স ঃ আহত বা মুমূর্ষু রোগীকে দুর্গত স্থান থেকে দ্রুত হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে পৌঁছানোর জন্য এ᐀ম্বুলেন্স ব্যবহার করা হয়৷ এছাড়া ধ্বংসস্তুপ থেকে কোনো কিছু টেনে বের করার জন্য দড়ি, কাছি বা চেইন ব্যবহার করা হয়৷ কোনো কিছু কেটে বের করার জন্য দা, ছুরি, কাঁচি এবং ছোট-বড় করাত ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ কোনো কিছু খুঁড়ে বের করার জন্য কোদাল, শাবল, খুরপি এবং হাপর ব্যবহার করা হয়৷ কোনো কিছু ভাঙ্গার জন্য হাতুড়ি, স্ক্রু খোলার জন্য স্ক্রু-ড্রাইভার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ উদ্ধারকার্যে ব্যবহারে জন্য দড়ির বিভিন্ন গিরা যথা: রিফনট, বোলিন, ফায়ারম্যানস চেয়ার নট ইত্যাদি স্কাউটিং কৌশল সকলের জানা থাকা প্রয়োজন৷
এছাড়াও উল্লিখিত যন্ত্রপাতি ও যানসমূহ চালানোর জন্য প্রচুর জ্বালানি তেলের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং দক্ষ লোকবলের ব্যবস্থা রাখতে হবে৷
If you have any doubt , let me know.